যক্ষা রোগের লক্ষণ কি কি সেগুলো জানুন
পোস্ট সূচিপত্রঃ যক্ষা রোগের লক্ষণ কি কি জেনে নিন।
- ভূমিকা
- যক্ষা রোগের লক্ষণ কি কি
- যক্ষা রোগের চিকিৎসা
- যক্ষা রোগের প্রতিরোধ
- যক্ষা রোগ কেন হয়
- যক্ষা রোগী ও তার খাদ্য
- উপসংহার
ভূমিকা
যক্ষা একটি সংক্রামক ব্যাধি। যক্ষা সাধারণত আমাদের ফুসফুসে হয়ে থাকে। কিন্তু ফুসফুস ছাড়াও যক্ষা আমাদের দেহের যে সকল অঙ্গে হতে পারে সেগুলো হলো। যেমনঃ মেরুদন্ড এর যক্ষা, , হৃদপিন্ডের আবরণ ও মস্তিষ্কের আবরণ হাড়-গিট, লসিকা গ্রন্থি ইত্যাদ। ২০১৭ সালে যক্ষা রোগী শনাক্ত ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে ২ লক্ষ ৪৪ হাজার ২০১ জনকে। শিশু রোগী সনাক্ত ১০০০০ হাজার ১৮৯ জন। ২০১৬ সালে যক্ষা চিকিৎসার সাফল্যের হার ৯৫ %।
বাংলাদেশে প্রতিবছর ছয় হাজার মানুষ যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। সারা
পৃথিবীতে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ প্রতিবছর যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
অতীতে যক্ষা রোগের কোন চিকিৎসা ছিল না কিন্তু বর্তমানে যক্ষা রোগের চিকিৎসা
রয়েছে চিকিৎসার মাধ্যমে যক্ষা একেবারে ভালো হয়ে যায়। তাই পরীক্ষায়
যক্ষা ধরা পড়লে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবনের
মাধ্যমে এই রোগ থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন। যক্ষ্মা হলে রক্ষা নাই এই কথার
ভিত্তি নাই।
তিন সপ্তাহের অধিক কাশি তার সাথে কফ ওঠা এবং কফের সাথে রক্ত ওঠা।
গায়ে গায়ে জ্বর আসা ও জ্বর যখন যায় ঘাম দিয়ে চলে যায়।
শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যায়।
খিদে না লাগা এবং খাবারে অরুচি।
দেহের ওজন কমে যায়।
বুকে ব্যথা অনুভব করা।
শরীর অল্পতে ক্লান্ত হয়ে যাই ।
এগুলো হলো যক্ষা রোগের প্রধান প্রধান লক্ষণ।
তিন সপ্তাহের অধিক কাশি হলে এবং তার সাথে কফ উঠলে ও কফের সাথে রক্ত উঠলে। তখন সাধারণত এটিকে আমরা যক্ষা রোগের লক্ষণ বলে থাকি তিন সপ্তাহের অধিক কাশি এবং তার সাথে কফ ওঠা যক্ষা রোগের একটি বিশেষ কারণ।
গায়ে গায়ে জ্বর আসা এবং জ্বর যখন যায় ঘাম দিয়ে চলে যায় ।এটি হলো যক্ষা রোগের
একটি প্রধান কারণ বা উপসর্গ
যক্ষা রোগের আরেকটি বিশেষ লক্ষণ হল আক্রান্ত ব্যক্তি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যায়।সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের মতো চলাফেরা করতে পারে না কারণ তার দেহ দুর্বল হয়ে যায়।
খিদে না লাগা এবং খাবারের অরুচি যক্ষা রোগের আরেকটি লক্ষণ। আক্রান্ত ব্যক্তির খিদে লাগে না ও খাবারের রুচি হারিয়ে ফেলে। খাবারের রুচি হারিয়ে ফেলার কারণে সে দুর্বল হয়ে পড়ে।
দেহের ওজন কমে যায় যক্ষা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির। ওজন কমে যাওয়ার প্রধান কারণ
হলো নিয়মিত খাবার খেতে পারে না প্রায় সময় জ্বরে আক্রান্ত থাকে। এজন্য যক্ষা
রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ওজন কমতে থাকে।
যক্ষা রোগের চিকিৎসা
আমরা সবাই জানি অতীতে যক্ষা রোগের কোন চিকিৎসা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে যক্ষা রোগের চিকিৎসা রয়েছে এবং চিকিৎসার মাধ্যমে যক্ষা রোগ সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা সম্ভব। যক্ষাকে সাধারণ কাশি ভাবা থেকে বিরত থাকুন তা না হলে আপনি বড় ধরনের বিপদে পড়তে পারেন ।তিন সপ্তাহের অধিক কাশি তার সাথে কফ ওঠা এবং কফের সাথে রক্ত ওঠা গায়ে জ্বর আসা ও জ্বর যখন যায় ঘাম দিয়ে চলে যায় শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়া।
খিদে না লাগা এবং খাবারে অরুচি দেহের ওজন কমে যাওয়া সমস্ত লক্ষণ বা উপসর্গ গুলো যদি আপনার মধ্যে দেখা দেয় তাহলে আপনি ডাক্তারের কাছে যাবেন ডাক্তার সাহেব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন আপনার যক্ষ্মা হয়েছে কিনা যদি আপনার যক্ষ্মা হয়ে থাকে তাহলে যে ওষুধগুলো খেলে আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন সে ওষুধ গুলো আপনাকে খেতে বলা হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসক আপনাকে চলতে বলবেন। আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চললে এর রোগ থেকে মুক্তি পাবেন ইনশাআল্লাহ।
যক্ষা রোগটি বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই মাক্স
ব্যবহার করতে হবে। যক্ষা দেহের যেকোনো অঙ্গকে আক্রান্ত করতে পারে। যেমন লিভার,
কিডনি মস্তিষ্কের আবরণ ,হৃদপিন্ডের আবরণ ইত্যাদি।
যক্ষা রোগের প্রতিরোধ
যক্ষা রোগ প্রতিরোধ করতে হলে আমাদের যে সকল নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমনঃ সকল প্রকার মাদকদ্রব্য থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে, ও প্রচুর তরল পান করতে হবে, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষাকরতে হবে, হাঁচি কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখতে হবে ও সম্ভব হলে মার্কস ব্যবহার করতে হবে।
যক্ষা রোগ কেন হয়
যক্ষা একটি সংক্রামক ব্যাধি। এই রোগ মূলত বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়। আক্রান্ত
ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু একজন সুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রবেশ
করে। ঘনবসতি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ জীবনযাপন করলে এই রোগে আক্রান্ত
হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে একজন ব্যক্তি সহজেই
শুধু যক্ষা নয় যেকোনো রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যারা বছরের পর বছর
মাসের পর মাস দিনের পর দিন মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকে তাদের এ রোগী আক্রান্ত
হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
প্রিয় বন্ধুরা আমরা প্রায় সবাই কম-বেশি জানি মানবদেহে যখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তখন মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে থাকে। খুব সহজে। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন বৃদ্ধি পায় তখন মানুষ সহজে রোগে আক্রান্ত হয় না। যক্ষা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি নিয়মিত খাবার খেতে পারে না যার ফলে তার দেহ আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে।
ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে থাকে। একজন যক্ষা রোগীর খাবারের তালিকায়
অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার গুলোর নাম থাকতে হবে। যেমনঃ টমেটো , গাজর,
পেয়ারা, কামরাঙ্গা, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যুক্ত খাবার বেশি বেশি
করে খাওয়া, মাছ-মাংস দুধ ডিম শাক-সবজি ইত্যাদি।
উপসংহার
প্রিয় বন্ধুরা পরিশেষে একটি কথাই বলতে চাই, অতীতে যক্ষা রোগের কোন চিকিৎসা ছিল
না কিন্তু বর্তমানে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি লাভ করা
সম্ভব। তাই পরীক্ষায় যক্ষ্মা রোগ ধরা পড়লে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী ফুল কোর্স ওষুধ সেবনের মাধ্যমে আপনি সুস্থ হয়ে যেতে পারেন
ইনশাল্লাহ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url