বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও চূড়ান্ত বিজয় সম্পর্কে জেনে নিন
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও চূড়ান্ত বিজয় সম্পর্কে যদি আপনি জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে আপনি পড়ে নিবেন তাহলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও চূড়ান্ত বিজয় সম্পর্কে আপনি সমস্ত তথ্য কথা জানতে পারবেন ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং এর চূড়ান্ত বিজয় বিশ্ব ইতিহাসের স্বাধীনতা আন্দোলন ও সাবাধিকার আদায়ের এক উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত। প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসন ও শোষণের পরে ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান বিভক্ত হয় 1947 সালে।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানি জনগণের উপর পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু হয়। দীর্ঘ নয়মাস যুদ্ধ করে এবং প্রায় 30 লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানের শোষণের হাত থেকে 971 সালের ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।পোস্ট সূচিপত্র: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও চূড়ান্ত বিজয় সম্পর্কে জেনে নিন
ভূমিকা
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধও চূড়ান্ত বিজয় সম্পর্কে এই পোস্টটিতে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও চূড়ান্ত বিজয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে আজকের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নেবেন। 1971 সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং এর চূড়ান্ত বিজয় বিশ্ব ইতিহাসের স্বাধীনতা আন্দোলন আদায়ের এক উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত ।
আরো পড়ুন: আসল খেজুরের গুড় চেনার উপায়
প্রায় 200 বছরের ব্রিটিশ শাসন ও শোষণের পর ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান বিভক্ত হয় ১৯৪৭ সালে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু হয়।তারপর দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে এবং প্রায় 30 লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানের শোষণের হাত থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও চূড়ান্ত বিজয়
- অসহযোগ আন্দোলন
১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রশ্নে ইয়াহিয়া খান তালবাহানা শুরু করলে জনগণ অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে ।১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকে দীর্ঘ ২৪ বছরের শাসন শোষণের যাতাকল থেকে মুক্তির জন্য বাংলার জনগণ পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এই আন্দোলন গড়ে ওঠে ।
এ আন্দোলনে বাংলার সর্ব শ্রেণীর এবং সকল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এক গণআন্দোলন শুরু
হয় ।যার পরিণতিতে আইয়ুব খান সরকারের পতন ঘটে ।তবে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে এই
অসহযোগ আন্দোলনের গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ।বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের
ইতিহাসে মার্চ মাসের অসহযোগ আন্দোলন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
- ৭ মার্চের ভাষণ
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব অপরিসীম। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষনা করলেন এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম বাঙালি তখন মুক্তি চাইছিল তখন শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের মাধ্যমে জাতি দারুনভাবে খুশি হল। মোটকথা সাত মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতি নতুন দিশা খুঁজে পায় এবং মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার মানসিক শক্তি অর্জন করে।
- ২৫ শে মার্চের কাল রাত্রির গণহত্যা
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙ্গালীদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে ভিন্ন
পথ গ্রহণ করে। সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান বাঙ্গালীদের ওপর এক গণহত্যার পরিকল্পনা
গ্রহণ করেন। তার ইচ্ছা অনুযায়ী বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫
মার্চ রাতে ঢাকা শহরে ঘুমন্ত জনতার ওপর এক ভয়াবহ গণহত্যা চালাই। রাজারবাগ পুলিশ
লাইন থেকে শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হল হিন্দু ধর্মীয়
মন্দির সহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা যায় ওই কালো
রাত্রে প্রায় পঞ্চাশ হাজার নর-নারীকে হত্যা করা হয়।
- স্বাধীনতা ঘোষণা
শেখাত্তর সালের ২৫ মার্চ কাল রাতে বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বাংলাদেশের
স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেও তা প্রকাশ পায়নি। 27 মার্চ জিয়াউর রহমান
চট্টগ্রাম থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের নামে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। যদিও
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বাংলাদেশ বহুমাত্রিক বিতর্ক রয়েছে তথাপি এ কথা স্বীকার
করতে হবে যে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ স্বাধীনতার চূড়ান্ত ডাক নিহিত ছিল।
- মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার সনদ
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কালীন অস্থায়ী মুজিবনগর সরকার ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল
অস্থায়ী রাজধানী মুজিবনগর থেকে স্বাধীনতার সনদ জারি করে এ সনদে বলা হয় ১৯৭০
সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে গঠিত সরকার এবং বাংলাদেশকে একটি
সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
- অস্থায়ী সরকার গঠন
বাংলাদেশের মুজিবনগর অস্থায়ী সরকারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কে রাষ্ট্রপ্রধান করা হয়। তবে শেখ মুজিবের অনুপস্থিতিতে উপরাষ্ট্র প্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলাম দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা ও মুক্তি সংগ্রাম কে সঠিক পথে পরিচালনার জন্যই অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়।
-
১৯৭১সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সফল হয়েছে একমাত্র সাধারণ মানুষের
অংশগ্রহণের কারণে। তার কারণ শক্তিশালী পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে টিকে থাকা
অল্পসংখ্যক বাঙালি মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে সম্ভব হতো না। এই যুদ্ধের সবচেয়ে বেশি
কষ্ট ভোগ করেছেন সাধারণ মানুষ এবং তাদের অংশগ্রহণ ছিল অনেক বেশি। ১৯৭১ সালের
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণ কমবেশি যোগদান করেছে। মুক্তিবাহিনী
শক্তিশালী হয়েছে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের ফলে।
-
মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় বাহিনী সমূহ
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে সুসঙ্গভাবে পরিচালনা করার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের সেনাপ্রধান নিযুক্ত করা হয় জেনারেল এম এ জি ওসমানী কে। সমগ্র দেশকে মোট 11 টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। এছাড়া এবং কে ফোর্স নামে তিনটি ব্রিগেড তৈরি করা হয়।
-
মুক্তিযুদ্ধে পরাশক্তি গুলোর ভূমিকা
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে দুই পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভিএন
ইউনিয়ন বিভক্ত হয়ে পড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় স্বার্থের কারণে
পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করে। অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশের পক্ষ নেয়।
আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত আমাদের পক্ষ্য নেই এবং আমাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা
করে আমাদের পক্ষ না নিয়ে আমাদের তীব্র বিরোধিতা করে।
-
পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও চূড়ান্ত বিজয়
ভারতের সহযোগিতা এবং সরাসরি যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানী বাহিনী বাংলাদেশের
প্রতিটি স্থানে পরাজিত হতে হতে জড়ো হয় ঢাকায় । পাকিস্তান বাহিনীর সর্বাধিক
নায়ক জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বে পাকিস্তানি সৈন্য যৌথ বাহিনীর প্রধান লে যে
জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করেন। ১৯৭১ সালের হুলো ডিসেম্বর স্বাধীন
বাংলাদেশের জন্ম হয়।
- বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দান
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভারত বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও
সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় 6 ডিসেম্বর। ভুটান বাংলাদেশের স্বীকৃতি
দেয়। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরের পর অন্যান্য রাষ্ট্র সমূহ স্বীকৃতিতে শুরু
করে। তবে 1971 সালের 6 ডিসেম্বর ভারতের স্বীকৃতি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে একটি
চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের সাহায্য করে।
-
স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা
১৯৭১ সালের দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয় যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর বুকে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশ নামে একটি রাষ্ট্র জন্ম হয়।
লেখক এর মন্তব্য
আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও চূড়ান্ত বিজয় সম্পর্কে অনেকটা ধারণা পেয়ে গেছেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন খোদা হাফেজ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url