OrdinaryITPostAd

হোল্ডিং কোম্পানির সংজ্ঞা ।হোল্ডিং কোম্পানির বৈশিষ্ট্য ।হোল্ডিং কোম্পানির সুবিধা ও অসুবিধা। মাল্টিমিডিয়া কোম্পানির বৈশিষ্ট্য জানুন।

 সম্মানিত পাঠক ,আজকের এই আর্টিকেলটি জুড়ে হোল্ডিং কোম্পানির সংজ্ঞা ,হোল্ডিং কোম্পানি বৈশিষ্ট্য , হোল্ডিং কোম্পানির সুবিধা ও অসুবিধা এগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। আপনি যদি জেনে থাকেন যে হোল্ডিং কোম্পানির সংজ্ঞা কি ?হোল্ডিং কোম্পানির বৈশিষ্ট্য কি ?হোল্ডিং কোম্পানির অসুবিধা ও সুবিধা গুলো কি কি ?


তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য না ।আর আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।

পোস্ট সূচিপত্র-হোল্ডিং কোম্পানির সংজ্ঞা। হোল্ডিং কোম্পানির বৈশিষ্ট্য। হোল্ডিং কোম্পানির সুবিধা ও অসুবিধা।

  • ভূমিকা
  • হোল্ডিং কোম্পানির সংজ্ঞা
  • হোল্ডিং কোম্পানির বৈশিষ্ট্য
  • হোল্ডিং কোম্পানির সুবিধা
  • হোল্ডিং কোম্পানির 
  • শেষ কথা

ভূমিকা

সহজ ভাষায় বলতে গেলে, হোল্ডিং কোম্পানি হল এমন একটি যৌথমূলধনী সংস্থা যা অপর একটি যৌথ মূলধনী সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে ।একটি যৌথ মূলধনী কোম্পানি অন্য এক বা একাধিক যৌথ মূলধনী কোম্পানির সমস্ত বা অধিকাংশ শেয়ার ক্রয় করে উক্ত কোম্পানিসমূহের উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করতে যে জোট গঠন করা হয় তাকে যৌথমূলধনী কোম্পানি বলে ।

যে সমস্ত কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করা হয়। সেসব কোম্পানি সমূহকে বলা হয় অধীন কোম্পানী । হোল্ডিং কোম্পানিকে অধীন কোম্পানির শেয়ারের কমপক্ষে ৫১% এর মালিক হতে হয়। হোল্ডিং কোম্পানির অধীন সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর পৃথক ও স্বাধীন সত্তা বজায় থাকে।

হোল্ডিং কম্পানির সংজ্ঞা

১। হোল্ডিং কোম্পানি এমন এক ধরনের ব্যবসায় সংগঠন ,যা বিভিন্ন কোম্পানির নিয়ন্ত্রণমূলক শেয়ার মালিকানা অর্জন করে তাদেরকে জোটভুক্তি করার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়।

২। যে কোম্পানি অন্য এক বা একাধিক কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ লাভের উদ্দেশ্যে তাদের অধিকাংশ বা নিয়ন্ত্রণযোগ্য শেয়ার ক্রয় করে তাকে হোল্ডিং কোম্পানি বলে।

৩। হোল্ডিং কোম্পানি হল অনেকগুলো কোম্পানির মধ্যে এমন একটি কোম্পানি যা অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারসমূহের মালিকানা ধারন করে।

৪। একটি কোম্পানি যখন অন্য এক বা একাধিক যৌথ মূলধনী কোম্পানির শেয়ারের অধিকাংশ ক্রয়ের মাধ্যমে ওই কোম্পানি সমূহের পরিচালনায় কর্তত্ব  লাভ করে  তখন তাকে ধারক বা হোল্ডিং কোম্পানি বলে।

হোল্ডিং কোম্পানি বৈশিষ্ট্য

হোল্ডিং কোম্পানি এমন এক ধরনের কোম্পানি যা অপর কিছু যৌথ মূলধনী কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ করে । নিম্নে হোল্ডিং কোম্পানি বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করঃ

১। গঠন-এক বা একাধিক যৌথ মূলধনী কোম্পানির মোট শেয়ারের কমপক্ষে ৫১% এর মাধ্যমে হোল্ডিং কোম্পানি গঠন করা হয়।

২। নিয়ন্ত্রণ-হোল্ডিং কোম্পানি অধীন কোম্পানির সময়ে অধিকাংশ শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অর্জন করে।

৩। স্বতন্ত্র অস্তিত্ব-অধীন কোম্পানির সমূহের নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা না থাকলেও স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বজায় থাকে।

৪। পরিচালনা-হোল্ডিং কোম্পানি নিজে ব্যবসায় পরিচালনার পাশাপাশি অধীন কোম্পানি সমূহকে পরিচালনা করে।

৫। আইনগত অস্তিত্ব-হোল্ডিং কোম্পানির যৌথ মূলধনী কোম্পানির মতো আইনগত অস্তিত্ব থাকে।

৬। পৃথক ব্যবসায়-হোল্ডিং কোম্পানি অধীনস্থ সকল কোম্পানিকে পরিচালনা করে পাশাপাশি নিজের  ব্যবসায় কার্যে নিয়োজিত থাকে।

৭। ক্রয়-হোল্ডিং কোম্পানি গঠিত হয় শুধুমাত্র অধীনস্থ কোম্পানি সমূহের অর্ধেকের বেশি শেয়ার ক্রয় করে।

৮। ভোট নিয়ন্ত্রণ-হোল্ডিং কোম্পানি অধীন কোম্পানির সমূহের অর্ধেকের বেশি শেয়ার ক্রয় করে বলে  অধীন কোম্পানির অধিকাংশ ভোট নিয়ন্ত্রণ করে।

হোল্ডিং কোম্পানির সুবিধা

সমজাতীয় এক বা একাধিক কোম্পানির সম্পূর্ণ বা অধিকাংশ শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে হোল্ডিং কোম্পানির উৎপত্তি হয় ।ব্যবসায় জগতে প্রতিযোগিতা হ্রাস ও আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে হোল্ডিং কোম্পানি গঠিত হয়।এছাড়াও হোল্ডিং কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে যেসব সুবিধা অর্জিত হয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:

১। সহজ গঠন-অন্যান্য জোট গঠনের তুলনায় হোল্ডিং কোম্পানির গঠন তুলনামূলক সহজ।অধীন কোম্পানির মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে অর্ধেকের বেশি শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে এ ধরনের কোম্পানি গঠন করা যায়।

২।প্রতিযোগিতা হ্রাস-এরূপ কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে অধীনস্থ কোম্পানিগুলো সমষ্টিগতভাবে উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করে  ।ফলে তাদের মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি হয় এবং প্রতিযোগিতা হ্রাস পায়।

৩। মূলধনের পর্যাপ্ততা-একাধিক কোম্পানিকে একসাথে মিলিত করার মাধ্যমে ওই সকল কোম্পানির মূলধন ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া যায়।ফলে অধীনস্থ কোনো কোম্পানির মূলধনের অভাব দেখা দিলে হোল্ডিং কোম্পানি নিজে কিংবা অধীনস্থ কোন কোম্পানি থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহের ব্যবস্থা করে।

৪। ব্যয় সংকোচন-হোল্ডিং কোম্পানির মাধ্যমে অধীনস্থ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসন ন্য়য়  নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।কারণ হোল্ডিং কোম্পানি অধীন কোম্পানির সমূহের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখে।

৫। বৃহদায়তন ব্যবসায়ের সুবিধা -হোল্ডিং কোম্পানির মাধ্যমে একাধিক কোম্পানি একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার আওতায় আসে। ফলে ব্যবসায় কার্যাবলী পরিচালনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৃহদায়তন ব্যবসায়ের সুবিধা ভোগ করা যায়।

৬। বাজার নিয়ন্ত্রণ-সমজাতীয় অনেক কোম্পানি একত্র হলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সহজসাধ্য হয় ।কারণ পারস্পরিক প্রতিযোগিতা হ্রাসের মাধ্যমে বাজারে একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার করে।

৭। দক্ষ ব্যবস্থাপনা-হোল্ডিং কোম্পানি সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনার ভার গ্রহণ করে ।এতে একটি কেন্দ্রভূত ব্যবস্থাপনার অধীনে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো পরিচালিত হয় ।এতে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব হয়।

৮। জনগণের আস্থা-ব্যবসায়ী জগতে যে সকল ব্যবসায়ী জোটের অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয় সেগুলোর তুলনায় হোল্ডিং কোম্পানির স্থায়িত্ব বেশি হওয়ার কারণে এটি সহজেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম।

৯। কোম্পানি আইনের সুবিধা ভোগ-হোল্ডিং কোম্পানির আওতাধীন কোম্পানিসমূহ যৌথ মূলধনী কোম্পানি আবার হোল্ডিং কোম্পানি নিজেও একটি যৌথ মূলধনী কোম্পানি ফলে এ জাতীয় জোট কোম্পানি আইনের বিভিন্ন প্রকার সুযোগ সুবিধা ভোগ করে।

ব্যবসায়ী জোট গঠনের মাধ্যমে বাজারে বৃহদায়তন ব্যবসায়ের সুবিধা ভোগ একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার ও অধিক মুনাফা অর্জন সম্ভব হয়।

হোল্ডিং কোম্পানির অসুবিধা

হোল্ডিং কোম্পানি একটি বৃহদায়তন কারবারে জোট এটি গঠনের মাধ্যমে কিছু সুবিধার পাশাপাশি যে সকল অসুবিধার পরিলক্ষিত হয় তা নিচে আলোচনা করা হলো

১। একচেটিয়া ব্যবসায় -এরূপ কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে অধীনস্থ কোম্পানিগুলো পারস্পরিক প্রতিযোগিতার অবসান ঘটায় ফলে একচেটিয়া ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হয়।

২। ব্যবস্থাপনায় সমস্যা-হোল্ডিং কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে ব্যবসায়ের আওতা ও পরিধি বৃদ্ধি পায়। ফলে নানাবিধ ব্যবস্থাপনার সমস্যার উদ্ভব হতে পারে।

৩। মূলধনের আধিক্য -হোল্ডিং কোম্পানি গঠনের ফলে কোম্পানি সমূহের মূলধন একত্রিত করা যায় ফলে একটি বিরাট মূলধনের সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষেত্রে হোল্ডিং কোম্পানি ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন কোম্পানি সমূহ ব্যবসায় বিনিয়োজিত এর পর্যাপ্ত মূলধন সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার করতে পারেনা ।ফলে কোম্পানির সমূহের মূলধনজনিত ব্যয় বৃদ্ধি পায়।

৪। দায়িত্ব ও কর্তৃত্বে অসামঞ্জস্য-হোল্ডিং কোম্পানি এর অধীন কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণ ভার গ্রহণ করে। এতে অধীনস্থ কোম্পানিগুলোতে এক ধরনের দায়িত্বহীনতার ভাব সৃষ্টি হয় ।যা সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে পরনির্ভরশীল করে তোলে ।আবার হোল্ডিং কোম্পানি অধীন কোম্পানির সমূহের উপর কর্তৃত্ব স্থাপন যতটা আগ্রহী ততটা দায়িত্ব ও পালন করেনা ফলে সামগ্রিক সাফল্য ব্যর্থ হয়।

৫। অগণতান্ত্রিক-হোল্ডিং কোম্পানি যেকোনো বিষয়ে এক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে অধীনস্থ কোম্পানি সমূহের মতামত প্রকাশের কোন সুযোগ থাকে না।

৬। মুনাফা আত্মসাৎ-কখনো কখনো হোল্ডিং কোম্পানি অধীনস্থ কোম্পানি মুনাফা আত্মসাৎ করে ।ফলে অধীনস্থ কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৭। অসামাজিক কাজকর্ম-হোল্ডিং কোম্পানি গঠনের ফলে কোম্পানি সমূহের হাতে প্রচুর পরিমাণে মূলধন সংগৃহীত হয়। আর কোম্পানি অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ডে বিনিয়োগ করে।

৮। সচ্ছল ও লাভজনক কোম্পানির সমস্যা-কখনো কখনো লাভজনক ও সচ্ছল কোম্পানিরপুঁজি অপেক্ষাকৃত দুর্বল কোম্পানিতে সরবরাহ করা হয় ।ফলে দুর্বল কোম্পানি কিছু সুবিধা ভোগ করলেও সচ্ছল ও লাভজনক কোম্পানির সমস্যা হয়।

শেষ কথা

সম্মানিত পাঠক ,এই পোস্টটি পড়ে আপনি সামান্যতম উপকৃত হলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না ।সেইসাথে কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই জানাবেন। আর এই ধরনের আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে চাইলে আমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪